-
ইউরোপা ক্লিপার (Europa Clipper)
সৌরজগতে রয়েছে ৮টি গ্রহ, ৫টি বামন গ্রহ ও কয়েকশত উপগ্রহ। সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি, বৃহস্পতির রয়েছে ৯৫টি উপগ্রহ, অনেকটা বৃহস্পতি নিজেই একটি ছোট সৌরমণ্ডল। তবে এতগুলো উপগ্রহের মধ্যে ইউরোপার অনেকটাই আলাদা। ইউরোপার মধ্যে লুকিয়ে আছে সৌরজগতের অনেক আজানা তথ্য, হয়তবা প্রানের অস্তিত্তের ব্যাপারেও নতুন কিছু জানা যেতে পারে। আর এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজার জন্যই ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে নতুন নভোযান পাঠানো হচ্ছে ইউরোপার অভিমুখে।
-
মহাকাশের আইন Space Laws
জাতিসংঘের তত্তাবধানে ১৯৬০/৭০ এর দশকে বিভিন্ন মহাকাশ সংক্রান্ত আইন প্রনয়ন , গৃহীত এবং কার্যকর করা হয়। মহাকাশ আইনের মূলনীতি হল, মহাকাশকে শান্তিপুর্নভাবে সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা এবং পারমাণবিক বোমা বা অন্যান্য মারাত্মক বোমা পরিবহন, পরীক্ষা , ব্যাবহার নিষিদ্ধ করন ।
-
স্পুটনিক
স্পুটনিক মানুষের তৈরি প্রথম মহাকাশযান। ১৯৫৭ সালের ৪ ঠা অক্টোবর এই মহাকাশযান মহাকাশে প্রেরণ করা হয়। রাশিয়ার তৈরি এই মহাকাশযান প্রযুক্তির ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। স্পুটনিক মহাশূন্যে প্রেরণের মাধ্যমে মহাকাশ বিজয়ের নতুন অধ্যায় শুরু করে।
-
এক্সো-প্ল্যানেট : ট্রাপিষ্ট -১
এক্সো-প্ল্যানেট : ট্রাপিষ্ট -১ (TRAPPIST-1) নতুন পাওয়া ৭টি গ্রহ নাসা। গত ২২ শে ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন ও জার্নালে এই তথ্য প্রকাশ করে। এই প্রথম কোন নক্ষত্র মণ্ডলের চারিপাশে এতগুলো গ্রহের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে, মোট ৭ টি গ্রহ এই নক্ষত্রকে কেন্দ্র ঘুরছে। তাদের মধ্যে তিনটি গ্রহ বাসযোগ্য অঞ্চলে (Habitable Zone)অবস্থিত।
স্যাটেলাইট
-
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST)
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ নাসার নির্মাণাধীন টেলিস্কোপ, পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় ২০২১ সালের ২৫ই সে ডিসেম্বর । JWST নতুন প্রজন্মের টেলিস্কোপ বলা হয়ে থাকে, এটা হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরি হিসেবে ধরা হচ্ছে ।
-
রকেটের ইতিহাস
আধুনিক রকেটের আবিষ্কার আসলে বেশ নতুন, ১৮৯৮ সালে রাশিয়ান স্কুলশিক্ষক কন্সটানটিন ছিলকসভকি (Konstantin Tsiolkovsky) রকেটের সাহায্যে মহাকাশ অভিযানের অভিমত ব্যাক্ত করেন, ১৯০৩ সালে তিনি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন, তিনি উল্লেখ করেন, তরল জ্বালানি ব্যাবহারের মাধ্যমে দূরপাল্লার রকেট তৈরি করা সম্ভব।
-
GPS স্যাটেলাইট
GPS এর সম্পূর্ণ নাম Global Positioning Systsem. GPS একটি স্যাটেলাইট ভিত্তিক ভৌগোলিক অবস্থান সনাক্তকারী পদ্দতি। GPS স্যাটেলাইট যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষ্যা বিভাগের অধীনে পরিচালিত একটি মিশন।
-
ব্যাপি-কলম্বো স্যাটেলাইট থেকে বুধগ্রহের ছবি,
ব্যাপি-কলম্বো মিশন, ইসা ( ESA- European Space Agency) ও জেক্সার (JAXA –Japan Aerospace Exploration Agency) যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই মিশন। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়, শেষ গন্তব্য সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধ। যদিও দূরতের দিক থেকে বুধ গ্রহ আসলে বেশি দূরে নয়, কিন্তু যাত্রা পথ বেশ লম্বা, প্রায় ৭ বছর যাত্রা শেষ করে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসে বুধ গ্রহের পৌঁছাবে বলে আশা করা যায়। মিশন ২০২৭ সালে মে মাসে সমাপ্তি হাওয়ার কথা। ব্যাপি-কলম্বো মিশন ইটালির বিখ্যাত বিজ্ঞ্যানী , গণিতবিদ জুসেপে (ব্যাপি) কলম্বোর সন্মানে রাখা হয়েছে।
সৌরজগৎ
-
শুক্র গ্রহ
সূর্য থেকে দূরত্বের দিক থেকে দ্বিতীয় গ্রহ। আকার, বায়ুমণ্ডল ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর সাথে মিল পাওয়া যায়, সেজন্য অনেকসময় শুক্র গ্রহকে পৃথিবীর যমজ গ্রহ বলে হয়। শুক্র প্রচণ্ড উষ্ণ, বায়ুমণ্ডল অত্যন্ত বিষাক্ত ও পৃষ্টে বিভিন্ন আগ্নেয়গিরি রয়েছে।
-
ধূমকেতু
ধূমকেতু হিমায়িত গ্যাস, শিলা ও ধূলিকণা দ্বারা গঠিত। ধূমকেতু সূর্যের নিকটবর্তী হলে, সূর্যের তাপের কারণে গ্যাস ও ধূলিকণার মিশ্রণে বিশাল লেজের সৃষ্টি করে, যা কয়েক লক্ষ কিলোমিটার হতে পারে।
-
ট্রাইটন - নেপচুনের উপগ্রহ
ট্রাইটন – নেপচুনের একটি রহস্যময় ও আকর্ষণীয় উপগ্রহ। সৌরজগতের এক প্রান্তে পড়ে থাকা একটি উপগ্রহ প্রথম আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ সৌখিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম ল্যাসেল (William Lassell) । নেপচুন আবিষ্কারের মাত্র ১৭ দিন পর ১৮৪৬ সালের ১০ ই অক্টোবর টেলিস্কোপের মাধ্যমে ট্রাইটন আবিষ্কার করেন। ট্রাইটন কিছুটা অদ্ভুত, যেমন এটি উল্টা দিকে নিজের গ্রহ নেপচুনকে আবর্তন করে, এটা সৌরজগতের সবচেয়ে শীতল স্থান।
-
গ্যানিমিড
গ্যানিমিড – বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ ও সৌরজগতের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ, আকারে আমাদের চাঁদ থেকে বেশ বড়, এমনকি বুধ গ্রহ থেকেও বড়। আপাত দৃষ্টিতে গ্যানিমিডকে নির্জীব, বিরান মনে হলেও তার রয়েছে বেশ কিছু আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য যেমন একমাত্র উপগ্রহ যার রয়েছে নিজস্ব চৌম্বকক্ষেত্র , ধারনা করা হয় গ্যানিমিডের পৃষ্ঠের নিচে রয়েছে গভীর সমুদ্র যার গভীরতা প্রায় ১৫০ কিমি এবং পানির পরিমান পৃথিবীর পৃষ্ঠের পানির চেয়েও বেশি। ।
তথ্য কনিকা
আমাদের গ্যালাক্সি – মিল্কিওয়ে ( আকাশগঙ্গা)
পৃথিবীর বয়স – ৪৫৪ কোটি বছর (প্রায়)
সৌরজগতের বয়স – ৪৫৭ কোটি বছর (প্রায়)
মহাকাশে বয়স – ১৩৭০ কোটি বছর
সৌরজগতের নিকটতম প্রতিবেশি তারামণ্ডলী – আলফা সেন্টরি
আমাদের গ্যালাক্সিতে তারার সংখা – প্রায় ১০০ বিলিয়ন ( ১ বিলিয়ন = ১০০ কোটি)
আমাদের প্রতিবেশি গ্যালাক্সি – এন্ড্রোমিডা (২৫ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে )
সৌরজগতের গ্রহের সংখা- ৮
সৌরজগতের বাইরে আবিষ্কৃত গ্রহের সংখা – ৫৬৭৮ টি
মহাকাশের তাপমাত্রা – ২.৭ কেলভিন (-২৭০.৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)
প্রথম স্যাটেলাইট – স্পুটনিক ১৯৫৭ সালে
মহাকাশে প্রথম মানব – ইয়ুরি গাগারিন , ১৯৬১ সাল
চাদে প্রথম সফল মানব মিশন – এপোলো-১১, ১৯৬৯ সালে
সবচেয়ে দূরবর্তী মহাকাশযান – ভয়েজার-১ (১৯৭৭ সালে প্রেরিত) , ২০২৪ জানুয়ারীতে এই মহাকাশযান পৃথিবী থেকে ১৩৬ AU দূরে রয়েছে এবং এখনো চলমান
১ AU (Astronomical Unit) = ১৫ কোটি কিমি , পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব
-
বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপা : প্রাণ ধারণের কি উপযোগী ?
বৃহস্পতি গ্রহের এই উপগ্রহ বিজ্ঞানীদের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু , আলোচনা থাকার কারণও রয়েছে, ধারনা করা হয়, এই উপগ্রহের ভিতর রয়েছে তরল সাগর। তরল সাগর প্রাণ ধারণের একটি আবশ্যিক উপাদান পৃথিবীতে, তাহলে কি এই উপগ্রহেও সম্ভব প্রাণ ? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার চেষ্টা চলছে।
-
বামন গ্রহ
এই ধরনের গ্রহ গোলাকার , সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে কিন্তু আকারে বেশ ছোট । নেপচুনের পরে কুইপার বেল্ট অঞ্চলে অবস্থান। প্লুটো একটি বামন গ্রহের উদাহরণ।
-
এক্সো-প্ল্যানেট GJ 1132b বায়ুমণ্ডলের সন্ধান
পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৯ আলোকবর্ষ দুরে অবস্থিত এবং পৃথিবী থেকে ১.৪ গুন বড় গ্রহে বায়ুমণ্ডলের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত কোন গ্রহে এই প্রথম বায়ুমণ্ডলের প্রমাণ পাওয়া গেল
-
টাইটানের হ্রদ
শনির উপগ্রহ টাইটান , এই উপগ্রহে তরল হাইড্রোকার্বনের সমুদ্র ও হ্রদ হয়েছে। জানামতে পৃথিবীর ছাড়া শুধু টাইটানেই সমুদ্র ও হ্রদ পাওয়া গিয়েছে, ক্যাসিনি মিশনের পর্যবেক্ষণে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাপমাত্রা প্রায় –180°C টাইটানের সমুদ্র প্রধানত তরল মিথেন ও ইথেনের।