বামন গ্রহ - সেরেস
সেরেস একটি বামন গ্রহ। মঙ্গল এবং বৃহস্পতির মধ্যে অবস্তিত গ্রহাণু বেষ্টনীর সবচেয়ে বড় বস্তু, বর্তমানে সেরেসকে বামন গ্রহ (dwarf Planet) বা ছোট গ্রহ বলা হয়। আকারে প্লুটোর চেয়ে অনেক ছোট। বাহুদিন পর্যন্ত সেরেস গ্রাহানু হিসেবে পরিচিত ছিল, ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা ইউনিয়ন (IAU - International Astronomical Union) সেরেসকে বামন গ্রহ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সেরেসের আবিষ্কার অনেক আগের, ১৮০১ সালে ইটালীয় গণিতবিদ জুসেপে পিয়াজ্জি (Giuseppe Piazzi) প্রথম সেরেসকে সনাক্ত করেন। তখন সেরেস গ্রাহানু হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০১৫ সালে নাসা প্রেরিত ডন মহাকাশযান প্রথম পর্যবেক্ষণের জন্য পৌছায়।
তথ্য কণিকা
দিন/রাত - ৯ ঘণ্টা
বছর - ১৬৮২ দিন ( সূর্যকে একবার পুর্ন আবর্তনের সময়)
ব্যাসার্ধ ৪৭৬ কিলোমিটার
সূর্য থেকে দূরত্ব - ২.৭৬ AU (1 AU = পৃথিবী ও সূর্যের গড় দূরত্ব )
সেরেস কিভাবে গঠিত হল
সেরেস অন্যান্য সৌরজগতের গ্রহ উপগ্রহের মত ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হয়। বিজ্ঞানীরা সেরেসকে এমব্রায়নিক গ্রহ বলে অভিহিত করেন, কারণ, ধারনা করা হয়, অন্যান্য গ্রহের মত সেরেসও একটি গ্রহ হওয়ার পর্যায়ে ছিল কিন্তু নিকটবর্তী বৃহস্পতি গ্রহের প্রবল মহাকর্ষীয় বলের প্রভাবে আর গ্রহ গঠিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
ভৌত বৈশিষ্ট্য
সেরেসের কঠিন পৃষ্ঠ রয়েছে, সেই হিসেবে অনেকটা টেরিসটরিয়াল গ্রহ বা স্থলজ গ্রহের মত যেমন পৃথিবী, বুধ, শুক্র, মঙ্গল। সেরেসের মনে হয় কঠিন কেন্দ্র (Core) রয়েছে, কেন্দ্রের উপরিভাগ ম্যান্টলে রয়েছে বরফের স্তর এবং সবার উপরের স্তরের ভূপৃষ্ঠ প্রস্তরময়। ধারনা করা হয়, ম্যান্টলে প্রায় ২৫ ভাগ বরফ, যদি এই ধারনা সত্যি হয় তাহলে সেরেসে পানির পরিমাণ পৃথিবী থেকেও বেশি। আর ভূপৃষ্ঠে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম সালফেটের লবণ।
বায়ুমণ্ডল: সেরেসের অত্যন্ত হাল্কা বায়ুমণ্ডল রয়েছে, বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
ডন মিশনের সর্বশেষ তথ্য
নাসা প্রেরিত ডন মিশনের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সেরেসে জৈব যৌগের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। আমরা জানি, পৃথিবীতে জৈবযৌগ প্রাণের জন্য একটি প্রধান উপাদান। ডন মহাকাশযানের ভিজিবল অ্যান্ড ইনফ্রা-রেড স্পেক্ট্রোমিটার থেকে উত্তর গোলার্ধে জৈবযৌগ সনাক্ত করা হয়েছে।
Published date: 18.02.2017
Reference